শায়খ আহমাদুল্লাহ— যে ৪টি বিষয় আপনার সাথে ঘটলে বুঝবেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে প্রচুর ভালোবাসেন | Shaykh Ahmadullah New Waz
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি বারকাতুহু, আজকে আপনাদের সাথে দিনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আলোচনা করবো।যেখানে মূল আলোচনা করেছেন Shaykh Ahmadullah—শায়খ আহমাদুল্লাহ।
আজকের বিষয় হলোঃ ৪টি আলামত থাকলে বুঝবেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে খুব ভালোবাসেন।
আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা যে কোনও মমিনের সব চেয়ে বড় কামনা, সব চেয়ে বড় চাওয়ার,সব চেয়ে বড় স্বপ্ন হওয়া উচিত। আর আল্লাহ তাআলা যখন কোনও বান্দাকে ভালোবাসেন, আল্লাহ কাউকে পছন্দ করেন তখন তার বেশ কিছু আলামত আছে, বেশ কিছু চিন্হ আছে, যেগুলো দেখে আমরা অনুমান করতে পারি, ধারণা করতে পারি, আল্লাহ তাআলা কাকে ভালোবাসেন, আর কাকে ভালোবাসেন না।
আল্লাহ তাআলার ভালোবাসার কথা এবং তার আলামতের কথা নবী সাঃ এর হাদিসে এসেছে, তার মধ্যে থেকে আজকে আমরা চারটি আলামতের কথা বলবো ইনশাআল্লাহ।
যে ৪টি বিষয় আপনার সাথে ঘটলে বুঝবেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে প্রচুর ভালোবাসেন
প্রথম আলামতেরঃ
কথা প্রায় হাদিসে বর্ণনিত হয়েছে। যে রাসূল সাঃ এরশাদ করেছেন,আল্লাহ তাআলা যখন কোনও বান্দা কে ভালোবাসেন, তখন তিনি জিব্রাইল আলাই সাল্লাম কে নির্দেশ করে বলেন উমুকের আমলের কারণে তার চিন্তাধারার কারণে চলা ফেরার বিশুদ্ধতার কারণে আমি তাকে ভালোবাসি। আল্লাহতালা কাউকে ভালবাসলে তখন তিনি জানিয়ে দেন জিব্রাইল আঃ নির্দেশ করেন তুমিও তাকে ভালোবাসো। তখন জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসমানে ঘোষণা দেন যে ওমুক কে আল্লাহ ভালোবেসেছেন। তাই নির্দেশ করেছেন ভালোবাসার। তোমরাও তাকে ভালোবাসো আসমানের সকল ফেরেস্তা তার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন।তখন আল্লাহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৃথিবীতে যারা বসবাস করে তাদের অন্তরেও ঔ ব্যক্তির প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন।
বর্ণনাকারী বলেন, আর যদি আল্লহ কাউকে ঘৃণা করেন অপছন্দ করেন একইভাবে অর্থাৎ জিব্রাইল আলাই সালাম কে ডেকে বলেন, আল্লাহ অমুকের কর্মের কারণে আমি তাকে অপছন্দ করি, তুমিও তাকে অপছন্দ করো। আসমানওলারা ও অপছন্দ করে জমিনের ব্যক্তিরাও অপছন্দ করতে থাকে।
এই হাদীস থেকে বোঝা গেল,আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন তার একটি আলামত হলো,পৃথিবীতে বেশির ভাগ মানুষ বা সচারাচর তাকে চিনে জানে সকলের ভালোবাসা তার প্রতি আল্লাহ সৃষ্টি হয়েছে দেন।
এখন আপনারা বলতে পারেন অনেক তথাকথিত তারকা তথাকথিত জনপ্রিয় শিল্পী বিভিন্ন সেক্টরে আমরা দেখি তারা খুবই জনপ্রিয় মানুষ অনেক ভালোবাসে ফ্যান ভক্ত পাওয়া যায়
তার মানে কি আল্লাহ তাদেরকে অনেক বেশি ভালোবাসেন বা ভালোবেসেছেন? জিব্রাইল আ ভালোবেসেছেন কিংবা আসমানের ফেরেস্তারাওরা কি ভালোবেসেছেন ব্যাপারটা কি তাই?
ব্যাপারটা তা না।
আসলে এখানে জমিনওয়ালাদের ভালোবাসা বলতে মমিনদের,নেককারদের, ইমানদারদের ভালোবাসা বোঝানো হয়েছে। যারা সৎকর্মশীল, যারা ভালো কাজ করতে চাই,যারা আদর্শবান,যারা মোত্তাকি যারা পরহেজগার এদের ভালোবাসা সচারাচর আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে দান করেন যে ব্যক্তি তার কর্মের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কাছে প্রিয় হয়েছেন।
তখন ঔ ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা অদৃশ্য অবর্ণনীয় এক ভালোবাসা মানুষের অর্থাৎ মমিনদের, মোত্তাকিদের অন্ততরে দান করে থাকেন।
যে ৪টি বিষয় আপনার সাথে ঘটলে বুঝবেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে প্রচুর ভালোবাসেন
২য় আলামতঃ আল্লাহতাআলা কাউকে পছন্দমতো করলে তা কি ভাবে বুঝবো?
তার দ্বিতীয় আলামত হলো,তাকে বিপদ আপদ দেন,তাকে মছিবত দেন, তাকে কষ্ট দেন।এটা হলো একটা আলামত যা আল্লাহ তাআলা সেই লোকটাকে ভালোবাসেন।
এই বিষয়ে সুনানে তিরমিজির এক হাদিসে রাসূল সাঃ বলেছেন,আর যখন আল্লাহ তাআলা কোনও মানুষ কে,কোনও জাতিকে ভালোবাসেন তখন তাদের পরিক্ষা নেন।তাদেরকে মসিবত দেন,কষ্ট দেন,রোগে শোকে, অসুবিধায় ফেলে নানা ভাবে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পরিক্ষা করেন।এই যে আল্লাহ তাআলা বিপদ-আপদে ফেলে দেন এইটা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসার আলামত।
আল্লাহ তাআলা যখন কাউকে পরিক্ষায় ফেলেন তখন আমাদের উচিত ধৈর্য সহকারে তা মেনে নেওয়া। আল্লাহর ইবাদত করা।
আমাদের মাঝেই এমন এক শ্রেণীর লোক আছে, যাদের বিপদ আপদ আসলে,দুঃখ বেদনা আসলে ধৈর্য হারা হয়ে পরে।কত সময় আল্লাহর প্রতি রাগ করেন, নাউজুবিল্লাহ।
এমন করা ঠিক নয়।
কারন,হযরত ইব্রাহিম আঃ কে আল্লাহ তাআলা কতটা পরিক্ষার মধ্যে ফেলেছেন, তিনি নবী হয়ে যদি তা ধৈর্য সহকারে পাশ করতে পারেন তাহলে আমরাও পারবো, এমন মনবল থাকা জরুরি, ইনশাআল্লাহ।
যে ৪টি বিষয় আপনার সাথে ঘটলে বুঝবেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে প্রচুর ভালোবাসেন
৩য় আলামতঃ আল্লাহ তাআলা কাউকে ভালোবাসলে তাকে দুনিয়া থেকে দুরে সরিয়ে রাখেন। কেন?
তাকে দুনিয়া থেকে হাবুডুবু থেকে বাচতে আল্লাহ তাআলা তকে দুনিয়া থেকে দুরে রাখেন।আমরা অনেকেই দুনিয়া চাই। পদ, পদবী, অর্থ কড়ি,প্রভাব প্রতিপত্তি কে না চায়। সবাই চাই আমরা। আল্লাহ তাআলা কিছু মানুষ কে ভালোবেসে এগুলো থেকে দুরে সরাইয়া রাখেন।কেনও তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে রাখেন? কারন এতে তার ক্ষতি হতে পারে সেই ভেবে।সে দুনিয়ার সাথে মিশে গেলে সে ধ্বংস হয়ে জাবে।তাই তাকে বাচিয়ে রাখেন।
এই প্রসংগে সহিহ হিব্বান,মোসতাদেরে হাকিম,সুনানে তিরমিজি সহ অনেক গুলো হাদিসে বর্নিত হয়েছে যে,রাসূলে করিম সাঃ বলেছেন,
তোমাদের কেউ তোমাদের প্রিয়জনরা অসুস্থ হলে যে রোগের জন্য পানি স্পর্শ করলে অসুবিধা হবে আর, সেই রকম পানি থেকে তোমরা তাকে বাচিয়ে রাখ। আল্লাহ যখন কোনও মানুষ কে ভালোবাসেন তখন মানুষ টাকেও আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়া থেকে বাচিয়ে রাখেন।
যে ৪টি বিষয় আপনার সাথে ঘটলে বুঝবেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে প্রচুর ভালোবাসেন
৪র্থ আলামতঃ নেক কাজ করার সুযোগ পাওয়া।
আল্লাহ যদি কাউকে নেক কাজ করার সুযোগ দেন, ভালো কাজ করার সুযোগ দেন তোউফিক হয় ভালো কাজ করার, ভালো পথে চলার এর মানে হলো আল্লাহ তাআলা তাকে ভালো বাসেন।
বিভিন্ন হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি রাসূলে পাক সাঃ বলেছেন,আল্লাহ তাআলা কারো কল্যান চান অথবা তাকে দিয়ে কল্যাণ করাতে চান, দিনের বুঝ, দিনের নলেজ,ইলম আল্লাহ তাআলা তাকে দান করেন,ভালো কাজ করার সুযোগ পাওয়া এটাও আল্লাহ তাআলার এক আলামত ভালোবাসা পাওয়ার।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাই কে তার পথে চলার তৌফিক দান করুন আমিন!